মুহররম ও আশুরায় উদযাপিত কিছু বেদআত
আশুরার দিন লোকেরা সুরমা লাগানো, গোসল করা, মেহেদি লাগানো, মুসাফাহা করা, খিচুড়ি রান্না করা, আনন্দ উৎসবসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানাদির আয়োজন করে থাকে এ সম্বন্ধে শায়খুল ইসলাম ইবনু তাইমিয়া রহ. কে প্রশ্ন করা হল, এর কোনো ভিত্তি আছে কি না?
জবাবে তিনি বললেন, এসব অনুষ্ঠানাদি উদযাপন প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে সহিহ কোনো হাদিস বর্ণিত হয়নি এবং সাহাবাদের থেকেও না। চার ইমামসহ নির্ভরযোগ্য কোনো আলেমও এসব কাজকে সমর্থন করেননি। কোনো মুহাদ্দিস এ ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ ও সাহাবাদের থেকে কোনো সহিহ কিংবা জয়িফ হাদিসও বর্ণনা করেননি। তাবিয়ীদের থেকেও কোনো আছর পাওয়া যায়নি। পরবর্তী যুগে কেউ কেউ কিছু বানোয়াট ও জাল হাদিস বর্ণনা করেছে যেমন, ‘যে ব্যক্তি আশুরার দিন সুরমা লাগাবে সে ব্যক্তি সে বছর থেকে চক্ষুপ্রদাহ রোগে আক্রান্ত হবে না’। ‘ যে ব্যক্তি আশুরার দিন গোসল করবে সে সেই বছর থেকে আর রোগাক্রান্ত হবে না। এরূপ অনেক হাদিস। এ ধরণের সবগুলো বর্ণনা মিথ্যা ও জাল। অত:পর শায়খ উল্লেখ করেছেন, -যার সার সংক্ষেপ হচ্ছে- এ উম্মতের অগ্রজদের উপর যখন সর্ব প্রথম ফেতনা আপতিত হল ও হোসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহু’র শাহাদাত সঙ্ঘটিত হল। এর কারণে বিভিন্ন দলের লোকেরা কি করল? তিনি বলেন, তারা জালেম ও জাহেলদের দলে রাপান্তরিত হল। হয়ত মুনাফিক বেদ্বীন নয়ত বিভ্রান্ত বিপথগামী। তাঁর বন্ধুত্ব ও আহলে বাইতের বন্ধুত্ব প্রকাশ করতে লাগল। আশুরার দিনকে রোলবিল, কান্নাকাটি ও শোক দিবস হিসাবে গ্রহণ করল। তাতে তারা বুক ও চেহারা চাপড়ানো, আস্তিন ছেড়াসহ জাহেলি যুগের বিভিন্ন প্রথা প্রকাশ করতে লাগল। বিভিন্ন শোকগাথা যার অধিকাংশই বানোয়াট ও মিথ্যায় পরিপূর্ণ ও গীত আবৃত্তি করতে লাগল। এর ভেতর সত্যের কিছুই নেই আছে শুধু স্বজনপ্রীতি ও মনোকষ্টের নবায়ন। মুসলমানদের পরস্পরে যুদ্ধ ও দুশমনি সৃষ্টির পায়তারা। পূর্ববর্তী পূন্যাত্মা সাহাবিদের গালমন্দ করার উপাদান। মুসলমানদের বিরুদ্ধে তাদের অনিষ্টি ও ক্ষতির পরিসংখ্যান কেউ লিখে শেষ করতে পারবে না। তাদের মোকাবেলা করেছে হয়ত আহলে বাইত ও হোসাইন রা. -এর ব্যাপারে বাড়াবাড়িতে লিপ্ত নাসেবি সম্প্রদায় অথবা একদল জাহেল সম্প্রদায়। যারা ফাসেদের মোকাবেলা করেছে ফাসেদ দিয়ে। মিথ্যার মোকাবেলা মিথ্যার মাধ্যমে, খারাপের জবাব দিয়েছে খারাপ দিয়ে এবং বেদআতের জবাব বেদআতের মাধ্যমে।